লালমনিরহাটে জাতীয় পার্টির ৫নং হারাটি ইউনিয়নের ৭, ৮ ও ৯নং ওয়ার্ডে এর ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে দু’পক্ষের সংঘর্ষে কমিটি গঠন স্থগিত হয়েছে।
শুক্রবার (২৯ জুলাই) বিকাল ৩টায় লালমনিরহাট সদর উপজেলার লোহাখুচি উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে জাতীয় পার্টি ৫নং হারাটি ইউনিয়নের ৭, ৮ ও ৯নং ওয়ার্ড এর কমিটি গঠনের জন্য ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
প্রধান অতিথি ছিলেন লালমনিরহাট জেলা জাতীয় পার্টির সদস্য সচিব মোঃ জাহিদ হাসান। তিনি বিশেষ কাজে ঢাকায় থাকায় অনুষ্ঠানে অনুপস্থিত ছিলেন। পরে লালমনিরহাট সদর উপজেলা জাতীয় পার্টির আহবায়ক এ্যাডঃ নজরুল ইসলামকে প্রধান অতিথি ও লালমনিরহাট জেলা জাতীয় পার্টির সদস্য ও ৫নং হারাটি ইউনিয়ন জাতীয় পার্টির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক আব্দুস সালাম মনজু-এঁর সভাপতিত্বে সন্ধ্যা ৬টায় অনুষ্ঠান শুরু হয়।
এ সময় লালমনিরহাট সদর উপজেলা জাতীয় পার্টির আহবায়ক এ্যাডঃ নজরুল ইসলাম, সদস্য সচিব রুহুল আমিন দুদু, লালমনিরহাট পৌর জাতীয় পার্টির সদস্য সচিব আলমগীর চৌধুরী, লালমনিরহাট জেলা প্রাক্তন সৈনিক পার্টি আহবায়ক মোঃ রফিকুল ইসলাম রতন, হারাটি ইউনিয়ন জাতীয় পার্টির সদস্য সচিব লাহেজুল ইসলাম রিপন, লালমনিরহাট রেলওয়ে শ্রমিক পার্টির সদস্য সচিব আনছার আলী, হারাটি ইউনিয়ন জাতীয় পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুর সালাম মঞ্জু, লালমনিরহাট জেলা জাতীয় স্বেচ্ছাসেবক পার্টি আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর চৌধুরী, লালমনিরহাট সদর উপজেলা জাতীয় ছাত্র সমাজের আহবায়ক কামরুজ্জামান সরকার, লালমনিরহাট সদর উপজেলা জাতীয় স্বেচ্ছাসেবক পার্টির আহবায়ক রুহুল আমিন টিটুসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সম্মেলনে ৫নং হারাটি ইউনিয়নের ও লালমনিরহাট জেলার বিভিন্ন স্তরের প্রায় ৭হতে ৮শতাধিক নেতাকর্মী ও সমর্থক উপস্থিত ছিলেন।
নির্বাচন প্রক্রিয়ার শুরুতেই জাতীয় পার্টি ৫নং হারাটি ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের দুই সভাপতি প্রার্থী মুসা মিয়া ও পূর্বের সভাপতি এমদাদুল হক সমান সংখ্যক ভোট পান-এ অবস্থায় নির্বাচন কমিটি লাটারী করার সিদ্ধান্ত নিলে দু’পক্ষের কথা কাটাকাটি করেন ও না’রাজী জানান এবং পরবর্তীতে মারামারিতে লিপ্ত হন। এতে ৭হতে ৮জন নেতাকর্মী আহত হন।
এমদাদুল হকের সমর্থকরা কারো কারো পাঞ্জাবী-শার্ট ও গেঞ্জী ছিঁড়ে বিবস্ত্র করার ও চেষ্টা করেন মর্মে জানা গেছে।
জাতীয় পার্টির ৭নং ওয়ার্ড সভাপতি প্রার্থী মুসা মিয়া অভিযোগ করেন আমার প্রতিদ্বন্দ্ধী প্রার্থী এমদাদুল হক বর্তমান ইউনিয়ন সেক্রেটারীর রিপনের আপন ভগ্নীপতি হওয়ায় তিনি স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে সমান ভোট দেখান। তার এই কাজে লালমনিরহাট সদর উপজেলা জাতীয় পার্টি সদস্য সচিব রুহুল আমিন দুদু’র সংশ্লিষ্টতা ছিল বলে অভিযোগ করেন।
পরে প্রধান অতিথি লালমনিরহাট সদর উপজেলা জাতীয় পার্টির আহবায়ক এ্যাডঃ নজরুল ইসলামের হস্তক্ষেপে ও পরামর্শে ৭নং ওয়ার্ড কমিটি গঠন পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত স্থগিত করে পরিস্থিতি শান্ত করা হয়।
এরপর ৮নং কমিটি দুলাল খানকে সভাপতি ও মহব্বত আলীকে সেক্রেটারী নির্বাচিত করেন।
এরপরে ৯নং ওয়ার্ড কমিটির সর্ব সম্মতিক্রমে সভাপতি হন আকবর আলী ও সেক্রটারী পদে বর্তমান ইউপি সদস্য কামরুল হাসান, পূর্বের সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম ও রসুলসহ ৩জন প্রার্থী হন।
ইউপি সদস্য কামরুল হাসান শত শত বহিরাগত লোকজন নিয়ে নির্বাচিত হওয়ার চেষ্টা করলে অপর দুই সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী জাহিদুল ইসলাম ও রসুল একত্রিত হয়ে আবার লাঠি সোটা নিয়ে সংঘর্ষে অবর্তীন হন। এ অবস্থায় নির্বাচন কমিটি ৯নং ওয়ার্ড কমিটি গঠনও পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত স্থগিত করে পরিস্থিতি শান্ত করেন।
পরে সম্মেলনের সিনিয়র নেতারা জানান, লালমনিরহাট জেলা জাতীয় পার্টির আহবায়ক ও সদস্য সচিবের সঙ্গে আলোচনা করে লালমনিরহাট জেলা সদস্য সচিবের উপস্থিতিতে স্থগিত কমিটিগুলো নির্বাচনের মাধ্যমে গঠন করা হবে।
পরে রাত ৯টায় ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের কাজ সমাপ্ত করা হয়।